অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ‘যদিও শিশুদের বন্দি করা উচিত নয়, তবু আপনাদের এবং এ দীর্ঘ সময়ে অন্যান্য আরো যেসব সদয় মানুষদের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে তাদের ধন্যবাদ। আমার মেয়ে গাজায় রানির মতো থেকেছে। গাজায় আপনারা যে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন এবং যে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন, তা সত্ত্বেও আপনাদের এমন সদয় আচরণ আমার মনে থাকবে।’
ওপরের কথাগুলো লিখেছেন গাজায় হামাসের জিম্মি হিসেবে থাকা পাঁচ বছর বয়সি এমিলিয়া অ্যালোনি নামের শিশুর মা ড্যানিয়েল অ্যালোনি। হামাসের হাতে ড্যানিয়েল নিজেও জিম্মি অবস্থায় ছিলেন। ৪৯ দিন পর মুক্তি পেয়ে গাজা ছাড়ার আগে হামাস যোদ্ধাদের ধন্যবাদ জানিয়ে লেখা এক চিঠিতে তিনি এসব কথা লিখেছেন।
অ্যালোনির চিঠিটি সোমবার হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেডের অফিসিয়াল টেলিগ্রাম পেজে পোস্ট করা হয়। চিঠিটি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সাড়া ফেলেছে। মূল চিঠিটি হিব্রু ভাষায় লেখা। টেলিগ্রামে প্রকাশ করার সময় চিঠিটির একটি আরবি অনুবাদসহ ইসরায়েলি ঐ মা ও তার মেয়ের একটি ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। ইসরায়েলি জিম্মিদের সঙ্গে হামাস যোদ্ধারা কেমন আচরণ করছে, তা নিয়ে শঙ্কার মধ্যে চিঠিটি প্রকাশিত হলো। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। চিঠিতে ড্যানিয়েল লিখেছেন, ‘আমার মেয়ে এমিলিয়ার প্রতি আপনাদের অসাধারণ মানবিক আচরণের জন্য হূদয়ের গভীর থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
ইসরায়েলি মা লিখেছেন, ‘ও (এমিলিয়া) আপনাদের সবাইকে ওর বন্ধু, শুধু বন্ধু নয়, প্রকৃতপক্ষেই ওর প্রিয় এবং খুব ভালো মানুষ মনে করে।’ গাজায় জিম্মিদের সঙ্গে হামাসের করা ভালো যত্ন নেওয়ার কথা স্বীকার করে ড্যানিয়েল লিখেছেন, ‘পরিচর্যাকারী হিসেবে আপনারা আমাদের পেছনে যে দীর্ঘ সময় ব্যয় করেছেন তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি আরো লিখেছেন, ‘যদিও শিশুদের বন্দি করা উচিত নয়, তবু আপনাদের এবং এ দীর্ঘ সময়ে অন্যান্য আরও যেসব সদয় মানুষদের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে তাদের ধন্যবাদ। আমার মেয়ে গাজায় রানির মতো থেকেছে।’ তিনি আরো বলেন, এ দীর্ঘ সময়ে আমাদের এমন কারো সঙ্গে দেখা হয়নি, যারা তার প্রতি সদয় ছিলেন না। আপনারা তার সঙ্গে কোমল এবং সহানুভূতিশীল ছিলেন।’
৭ অক্টোবর হামাসের হাতে জিম্মি হওয়া প্রায় ২৪০ জনের মধ্যে দুজন হলেন অ্যালোনি ও তার মেয়ে এমিলিয়া। হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ২৪ নভেম্বর অন্যান্য জিম্মিদের সঙ্গে তারা মুক্তি পেয়েছেন। জিম্মি হওয়ার আগে তারা দক্ষিণ ইসরায়েলের কিবুতজ-নির-ওজে ড্যানিয়েলের বোন এবং তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন।
হামাসের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তার চিঠিটি শেষ করেছেন এমিলিয়ার মা। তিনি লিখেছেন, ‘গাজায় আপনারা যে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন এবং যে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন, তা সত্ত্বেও আপনাদের এমন সদয় আচরণ আমার মনে থাকবে।’ তিনি বলেন, এই পৃথিবীতে আমরা যদি সত্যিই ভালো বন্ধু হতে পারতাম! গাজাবাসীকে শুভকামনা জানিয়ে তিনি আরো লিখেছেন, ‘আপনাদের সবার স্বাস্থ্য এবং মঙ্গল কামনা করছি…আপনাদের ও আপনাদের পরিবারের সন্তানদের জন্য সুস্বাস্থ্য কামনা ও ভালোবাসা।’
Leave a Reply